Advertisement

কলেরা (Cholera)

 কলেরা একটি পানি ও খাদ্যবাহিত সংক্রামক রোগ যা ভিব্রিও কলেরা (Vibreo Cholera) নামক একটি ব্যাকটেরিয়া দ্বারা হয়ে থাকে। এই ব্যাকটেরিয়াটি কমাকৃতির (Vibrio), গ্রাম নেগেটিভ এবং মনোট্রিকাস (কোষের এক প্রান্তে একটি ফ্ল্যাজেলাম যাদের থাকে,তাদেরকে Monotrichous ব্যাকটেরিয়া বলে) ধরনের। এটির দৈর্ঘ্য ৫ মাইক্রন এবং প্রস্থ ০.৪-.০৬ মাইক্রন। এটি মানবদেহের ক্ষুদ্রান্ত্রের মিউকাসে আক্রমণ করে এবং কলেরাজেন নামক এন্টারোটক্সিন পদার্থ ক্ষরণ করে যার কারণে অন্ত্রের প্রাচীরে ব্যাথাসহ ক্ষত সৃষ্টি হয়। এই ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে পৃথিবীতে প্রতি বছর হাজার হাজার লোক মারা যায়।


ছবি : কলেরার জীবাণু Vibrio Cholera (Adapted from freepik)

কলেরা রোগের প্রধান লক্ষণ হচ্ছে চালধোয়া পানির মতো পাতলা পায়খানা। তাছাড়াও জ্বর, শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, বমি ও ঘনঘন পাতলা পায়খানা, চোখ গর্তে বসে যাওয়া, রোগীর প্রচন্ড পিপাসা অনুভব করা, হাত ও পায়ের পেশি কুঁকড়ে আসতে থাকা, দেহ বিবর্ণ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষন প্রকাশ পায়। বারবার পায়খানার ফলে রোগীর শরীরে পানি ও লবণের ঘাটতি দেখা দেয়, যার ফলস্বরূপ রোগী ডিহাইড্রেশনে (পানিশূন্যতা) ভোগে। তাই কলেরা আক্রান্ত রোগীকে বেশি করে খাবার স্যালাইন( Oral Rehydration Saline-ORS) ও ডাবের পানি খাওয়াতে হবে। তাছাড়া জরুরি ভিত্তিতে শিরার মাধ্যমে ইন্ট্রা ভেনাস ফ্লুইড প্রয়োগ করা যায়। ইনফেকশনের জন্য টেট্রাসাইক্লিন জাতীয় এন্টিবায়োটিক বেশ কার্যকর।

কলেরা যেহেতু একটি পানিবাহিত রোগ,তাই এটি থেকে বাঁচতে হলে বিশুদ্ধ খাবার পানির বিকল্প নেই। পঁচা -বাসি খাবার,দূষিত খাবার এসব বর্জন করতে হবে। রোগীর পরিধেয় কাপড়চোপড় নদীনালা, খালবিলে না ধুয়ে গরম পানিতে সিদ্ধ করে রোদে শুকাতে হবে। সবসময় পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে চলতে হবে। খাবার আগে ও পায়খানার পরে সাবান বা ছাই দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুতে হবে।

Post a Comment

0 Comments